পর্ব ২- ঘোর অন্ধকারে উজ্জল নক্ষত্রের উদয়
আবর উপদ্বীপ মক্কায় প্রাচীন বংশধর কুরাঈশ বসবাস করতেন, পয়গাম্বরদের আদর্শ হতে দূরে থাকার কারণে, মূর্খের শাসন ও মূর্খতা এবং সে যুগের নোংড়া, অপবিত্র কার্যক্রমের ফলে এমন অবস্থা সৃষ্টি হয়েছিল যে, সেখানে আদর্শের কোন চিহ্নই ছিল না। যা কিছু দেখা যেত তা শুধুই বৈষম্য, অত্যাচার, নোংড়ামী, মতভেদ, যুদ্ধ, রক্তপাত, হিংসা, স্বার্থপরতা, ছন্নছাড়া, এবং লাগামহীনের খবরাদি। এ রকম এক অন্ধকার পরিবেশে একটি আদর্শ দম্পতি (খুয়াইলিদ ও ফাতিমা) হতে এক উজ্জল নক্ষত্রের আবির্ভাব ঘটে। এই উজ্জল নক্ষত্রটি হচ্ছে হযরত খাদিজা (সা.) যিনি রাসূলের (সা.) জন্মের ১৫ বছর পূর্বে (নবুয়্যত ঘোষণার ৫৫ বছর পূর্বে) জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তার জন্ম তারিখ যদিও নির্দিষ্টভাবে উল্লেখ নেই তবে তার মৃত্যু তারিখ প্রসিদ্ধ বর্ণনানুযায়ী নবুয়্যতের দশম বছরের রমজান মাসে আবু তালিবের মৃত্যুর ঠিক তিন দিন পর ৬৫ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন। রাসূল (সা.) তাকে তার সন্তান হিন্দ-এর নামানুসারে উম্মে হিন্দ বলে ডাকতেন।
এই মহিয়সী নারী ৪০ বছর বয়সে রাসূলের (সা.) যাঁর বয়স তখন ২৫ বছর ছিল বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তিনিই প্রথম নারী ছিলেন যিনি ইসলামের উদয়ান্তে সর্ব প্রথম ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন। ২৫ বছর যাবৎ রাসূলের (সা.) সাথে যুগল জীবন যাপন করেন। এই দিনগুলিতে সর্বদা পরাক্রান্ত ও আত্মত্যাগী সাথী, দয়াশীল বন্ধু হিসেবে রাসূলের (সা.) সাথে ছিলেন।
তার সম্পর্কে হযরত আবু তালিব সেই অন্ধকার যুগে বলেছিলেন: খাদিজা (সা.) এমনই এক নারী যে সকল ক্ষেত্রে পরিপূর্ণ, বরকত ও সৌন্দর্য্যে ভরপুর। যার থেকে সব ধরনের অবজ্ঞা ও অপবাদ অনেক দূরে। সে এমনই নারী যে ব্যক্তিত্বসম্পন্ন ও সম্মানিত।
সবচেয়ে আশ্চর্য্যের বিষয় হল: ইমাম হাসান (আ.) যার সৌন্দর্য্য বনী হাসিমের সবার নিকট উপমা হিসেবে চিরস্মরণীয় হয়ে আছে। তিনি স্বয়ং এক বক্তব্যে বলেছেন:
“যখন আল্লাহ তায়ালা সবার চিত্রাঙ্কন করছিলেন আমিই সবচেয়ে বেশী তার সাথে অর্থাৎ হযরত খাদিজার (সা.) সাথে সদৃশ্য ছিলাম”।