পর্ব ৩- ইসলামের পূর্বে ও পরে হযরত খাদিজার (সা.) পাঁচটি পদবী
হযরত খাদিজা (সা.) জন্মের পূর্বে, ঐশী গ্রন্থ ইঞ্জিল যা হযরত ঈসার (সা.) উপর অবতীর্ণ হয়েছিল তাতে “বরকতময় নারী ও বেহেশতে হযরত মরিয়মের (আ.) সাথী” হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। যেমন: যেখানে হযরত ঈসাকে (আ.) উদ্দেশ্য করে শেষ নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) সম্পর্কে বলা হয়েছে: তার বংশধর বরকতময় থেকে যিনি বেহেশতে তোমার মাতা হযরত মরিয়মের (আ.) সাথী।
যদিও অন্ধকার যুগে সচ্চরিত্র নারী খুবই কম ছিল ও অনেক নারীই সে যুগে অসৎ কর্মে লিপ্ত ছিল কিন্তু হযরত খাদিজা (সা.) সে যুগেও তার সর্বদিক থেকে পবিত্রতার জন্য “তাহেরাহ” অর্থাৎ পবিত্রা উপাধি অর্জন করেছিলেন।
তার ব্যক্তিত্ব সে যুগেও এত বেশী উচ্চ পর্যায়ে ও সম্মানের পাত্র ছিল যে, তাকে সবাই “সায়্যেদাতুন নেসাওয়ান” বা নারীদের সর্দারিনী বলে ডাকতেন।
সংক্ষিপ্তাকারে বলতে হয় যে, অন্ধকার যুগের নরীদেও মধ্যে হযরত খাদিজার (সা.) অবস্থান এতটাই প্রিয়ভাজন ও সম্মানিত ছিল যে, পূর্ণতা ও উচ্চ মর্যাদার ক্ষেত্রে ছিলেন অনুপম। সে কারণেই বিবাহের পর রাসূল (সা.) তাকে “কুবরা” বা পরিপূর্ণ ও উচ্চাসন উপাধি দিয়েছিলেন।
দোয়া নুতবাতে যেমন বর্ণিত হয়েছে হযরত খাদিজাকে (সা.) “খাদিজাতুল গাররা” অর্থাৎ সম্ভ্রান্ত খাদিজা বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে।
হযরত খাদিজার (সা.) অঢেল সম্পদ
খাদিজার (সা.) বৈশিষ্ট্যসমূহের মধ্যে একটি বৈশিষ্ট্য হল ব্যবসা-বাণিজ্যে ও অর্থনীতিতে চেষ্টা-প্রচেষ্টার মাধ্যমে তার যুগের সবচেয়ে ঢণাড্য ব্যক্তি ও দৃষ্টান্তহীন করে নিজেকে গড়ে তুলেছিলেন। তিনি ইসলামের পথে তার সমস্ত ধন-সম্পদকে ব্যয় করেছেন।
ইসলামের অগ্রগতি ও উন্নয়নের জন্য হযরত খাদিজার (সা.) সম্পদ ছিল অত্যন্ত জরুরী ও আবশ্যক। তার ধন-সম্পদ এতটায় উপকারে এসেছিল যে রাসূল (সা.) সে সম্পর্কে বলেছেন:
খাদিজার (সা.) সম্পদের মত অন্য কোন সম্পদই আমাকে এতটা লাভবান করেনি।
ঐতিহাসিকগণ হযরত খাদিজার (সা.) সম্পদকে তিনটি ভাগে বিভক্ত করেছেন
তার সত্তর হাজার উট ছিল যেগুলোর মাধ্যমে ব্যবসার রসদপত্র দেশের আভ্যন্তরে ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিভিন্ন স্থানে বহন করতেন।
তার বিশালাকার একটি গুদাম ঘর ছিল যে ঘরের উপরে সবুজ রেশমী কাপড়ের তৈরী সাইন বোর্ড ঝুলানো ছিল। সে ঘরটি ছিল বিভিন্ন ধরনের মাল সম্পদে ভরপুর।
তার অনেকগুলি দাস-দাসী বা কর্মচারী ছিল যারা তার ব্যবসার রসদপত্র বিভিন্ন দেশে আমদানী বা রপ্তানী করতো।